সোমবার, ৮ই জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,
২রা মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি, সকাল ১১:০১

স্মৃতির পাতায় চির অমলিন হয়ে থাকবেন প্রিয় মনিরুজ্জামান ভাই

স্টাফ রিপোর্টারঃ

দেখতে দেখতে কেটে গেল প্রায় ১৩ টি মাস। মনে হলো মাত্র সেদিন পরিচয় হলো কাঁচপুর হাইওয়ে থানার সুযোগ্য অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মরিুজ্জামান ভাইয়ের সাথে। গত ৭ অক্টোবর কাঁচপুর হাইওয়ে থানায় তাকে ফেয়ারুল দেওয়া হয়েছে হয়তো শনিবার তিনি তার কর্মস্থল ছেড়ে হাইওয়ে সিলেট রিজিয়নে চলে যাবেন তাই তাকে কাছ থেকে দেখা কিছু কথা আজ না বলেেলই নয়। তার মধ্যে ছিল স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, শৃঙ্খলতা, শালিনতা, নৈতিকতা, বিচক্ষনতা, মানবিকতা, ন্যায়পরায়নতা,বন্ধুসুলভতা,সাহসিকতা,স্পষ্টবাদী,কর্মঠ,অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ও কঠোরতাসহ একজন পুলিশ অফিসারের যেসকল গুনাবলী থাকা দরকার আমি কাছ থেকে তার মধ্যে সব কটিই দেখেছি। ব্যবহার ও ভালবাসা দিয়েই মানুষের মন অতি সহজেই জয় করতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি সরকারের অর্পিত দায়িত্ব কর্তব্য পালন করতে এসে কাঁচপুর হাইওয়ে থানাকে একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে রুপ দিয়ে কাঁচপুর হাইওয়ে থানাকে বদলে দিয়েছেন। কে কোটিপতি আর কে সাধারন মানুষ সেদিক বিভাজন না করে তিনি সকলকে এক চোখেই দেখেছেন। মহাসড়কের কোথাও কোন সমস্যা সৃষ্টি হলে রাত যতই হোকনা কেন ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছেন। রাত ২ টা ৩ টাও যদি মহাসড়কের যে কোন সমস্যা নিয়ে কোন ভুক্তভোগী ওসি মনির ভাইকে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করে ধৈর্য্যসহকারে তার কথা শুনে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহন করতেন। অনেক সহকর্মী সংবাদকর্মীরা যে কোন যানবাহন, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত আত্মীয় স্বজনের লাশের ব্যাপারে, কিংবা সড়ক দুর্ঘটনাসহ নানাবিধ সমস্যা নিয়ে তার কাছে গিয়ে পরিচয় পেশ করার আগে ঘটনা খুলে বলার পর তিনি তার সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে। করোনার ভয়াবহতার সময়ে মহাসড়কে দুর্ঘটনায় নিহত অজ্ঞাত লাশ কেই নিতে চায়নি, তিনি এলাকা ভিত্তিক কবরস্থানের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিবর্গকে অনুরোধ করিয়ে লাশ নিজ খরচে দাফন করিয়েছেন। আমার সাথেও পরিচয় হয়েছে আমি সংবাদকর্মী নিজের পরিচয় গোপন করে আমার এক আত্মীয়র একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় পতিত হলে ছুটে গিয়ে ছিলাম গত বছরের নভেম্বর মাসে। আমাকে আপ্যায়নের পর তিনি তাৎক্ষণিক সেটা সমাধান করে দিলেন। এর পর আমি আমার পরিচয় দিলাম। তখন তিনি আমাকে বললেন আপনার পরিচয় না পেয়েও যেটা করেছি পরিচয় আগে পেলেও একই কাজটি করতাম অর্থাৎ যেটা ন্যায় সেটাই করার চেষ্টা করি বলে জানান। অনেকেই আছেন যারা পরিচয় দেওয়ার আগেই সমস্যার সমাধান পেয়েছেন। টাকার পিছনে কখনোই তিনি ছুটেননি, তিনি বলতেন জোর জুলুম করে অঢেল টাকা কামিয়ে কাকে খাওয়াবো? ওই টাকা আমার দরকার নেই সব সময় বলতেন। তিনি তার অধিনস্তদেরকেও বলতে টাকার পিছনে না ছুটে কাজের পিছনে ছুটেন কর্মফল পাবেন এবং সন্মান ও মর্যাদাও পাবেন। তিনি চলতেন সাদামাঠাভাবে, ছিলনা কোন দাম্ভোক্তি, একজন সহজ সরল ও সদা হাস্যোজ্জল ও বড় মনের একজন মানুষ তিনি। সকলের সাথে হাসি দিয়ে কথা বলেন। কারো সাথে করেননি কোন রুঢ়– আচরণ। কুষ্টিয়ার মানুষের ভাষা এমনিতেই খুব সুন্দর যার প্রমান তিনি রেখেছেন এই অঞ্চলবাসীর কাছে। তাকে আরো দেখেছি তার কর্মস্থলে দায়িত্ববোধটাকেই অপেক্ষাকৃত বেশী প্রাধান্য দিয়েছেন। মহাসড়ক নিবিঘœ রাখতে সর্বদা সতর্ক ছিলেন। একুশ শতকের শুরুতেই আড়াইহাজারের বাসিন্দা প্রবীন সাংবাদিক জসিম খোকন কাঁচপুরে অজ্ঞাত গাড়ি দুর্ঘটনায় গভীর রাতে নিহত হন। কাঁচপুর হাইওয়ে থানার টহল পুলিশ লাশে ছবি তুলে ওসি মনির ভাইকে পাঠালে তিনি চিনতে পারেন এটা সাংবাদিক খোকন জসিমের লাশ। ওসি মনির ভাই সিসি টিভি রেকর্ড পর্যালোচনা করে পরবর্তীতে ওই গাড়ি আটক করে মালিকের কাছ থেকে নিহত খোকন জসিমের পরিবারবর্গকে ১ লাখ টাকা পাইয়ে দিয়েছেন। এ রকম অনেক সহযোগিতার করেছেন সাধারন মানুষকে। একাধিক ডাকাত ছিনতাইকারী, মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছেন। নোংরা পরিবেশে থাকা কাঁচপুর হাইওয়ে থানাকে সংস্কার করে সুসজ্জিত করেছেন। এই থানার বিরুদ্ধে অতীতে সাধারন মানুষের নানা অভিযোগ ও ক্ষোভ ছিল। কিন্তু সেই অভিযোগ দুর্নাম গুঁচিয়েছেন মানুষকে সেবা দিয়ে । তিনি বলতেন মানুষকে সেবা সঠিকভাবে দিতে পারলে মনের মধ্যে তৃপ্তি পাই। আইনের রক্ষক হয়েও সর্বোচ্চ ছাড় দিয়ে সেবা করেছেন এ অঞ্চলের মানুষদের। আমরা যারা মিডিয়াকর্মী সিদ্ধিরগঞ্জে আছি আমরাও কাঁচপুর হাইওয়ে থানায় ২/৩ মাস পর একবার যেতাম কিনা সন্দেহ। কিন্তু মনির ভাই এখানে এসে থানার রুপ বদলে দিয়ে থানাকে সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে রুপ দেওয়ার পর মানুষের কল্যাণে একের পর এক ভাল কাজ করার সুবাধে রিপোটিংয়ের কারণে আমাদেরও যাতায়াতটা বেড়ে যায় । শুধু তিনি নন তার সকল অফিসার ও ফোর্সদেরও সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন কোন মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হয়। কর্মকর্তারাও মনির ভাইর নির্দেশ মোতাবেক চলেছেন। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতেন তিনি। সব সময় একটা কথা বলতেন, আমি কার উপর জুলুম করবো, কাকে হয়রানি করবো, উপরওয়ালাতো একজন আছেন তিনি সব দেখেন হিসেব একদিন পাইটু পাই দিতে হবে এ কথাও বলতেন, তাই যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করেছেন তিনি। বাঞ্ছারামপুরের সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন তিনিও নিজে সাংবাদিক পরিচয় না দিয়ে তার এক আত্মীয়ের একটি লাশের ব্যাপারে মনির ভাইর কাছে গিয়েছিলেন সাথে সাথে সহজ প্রক্রিয়ায় আনোয়ারকে সহযোগিতা করেছেন। দুই গাড়ির সংঘর্ষ হলে থানায় দুই গাড়ির চালক উপস্থিত হলে দুজনকে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে মিমাংসার কথা বললেন, চালকরা মিমাংসা হয়েছেন এ কথা মনির ভাইকে জানানোর পর গাড়ি ছেড়ে দেন। টাকার পিছনে কখনোই তাকে ছুটতে দেখিনি। অথচ যদি তিনি একটু হাত এদিদক সেদিক করতেন তবে টাকার বন্যা বয়ে যেত তার কাছে। তিনি সব সময় সংবাদকর্মী ছাড়াও অন্যান্যদের কাছেও বলতেন ্এডিশনাল আইজিপি মলি­ক ফকরুল ইসলাম স্যার ও এসপি আলী আহমেদ খান স্যার এর আদেশ পালন করা এবং স্যারদের সুনাম ও সন্মান অক্ষুন্ন রেখেই আমার পথচলা শ্রেয় বলে মনি করি। সংবাদকর্মীরা যে তার দোষ ত্র“টি খুঁজেননি তা নয়, কিন্তু জনগনের অকল্যান হয় এমন কিছু করেননি এবং তার অধিনস্ত কর্মকর্তাদেরও করতে দেননি। যার কারণে মিডিয়ার্মীরাও তার সফলতা প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় তুলে ধরেছেন অসংখ্যবার। তিনি টাকার কাছে বিক্রি হননি বলেই আজ এত জনপ্রিয় হয়েছেন। ৭ অক্টোবর ২০২১ ইং তারিখ বৃহস্পতিবার মনির ভাইকে কাঁচপুর হাইওয়ে থানায় সন্ধ্যার পর ফেয়ারুল দেওয়া হয় । কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশ, হাইওয়ে শিমরাইল ক্যাম্প ও ভুলতা হাইওয়ে ক্যাম্পের পক্ষ থেকে এ ফেয়ারুল দেওয়া হয়েছে। খবর পেয়ে সংবাদকর্মীরাও ছুটে যান একজন সফল ওসি হিসেবে এবং তার সফল কর্মযজ্ঞে অভিভুত হয়ে তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। সেখানে হাইওয়ে পুলিশ গাজীপুর রিজিয়নের নারায়ণগঞ্জের সার্কেল অমৃত সূত্রধর ওসি মনির ভাইয়ের দীর্ঘ প্রায় ১৩ মাসের কর্মময় জীবনীর উপর গঠনমূলক আলোচনায় এইটা স্পষ্ট ছিল যে তিনি মানবিক পুলিশ অফিসার হিসেবে জনকল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন। সার্কেল অমৃত সূত্রধর শতভাগ একজন সৎ, নির্ভীক , কর্মঠ চৌকস ও নীতি ও আদর্শবান কর্মকর্তা হিসেবে ব্যাপক ভাবে সকলের কাছে পরিচিত। সেই সার্কেল অমৃত সূত্রধর ও ওসি মনির ভাইকে একজন সফল ওসি হিসেবে আাখ্যায়িত করেছেন তার মহৎ কর্মযজ্ঞের কারণে। সার্কেল অমৃত সূত্রধর সাদাকে সাদা এবং কালোকে কালোই বলেন, এখানে কোন বিনিময়ে কিংবা কোন প্ররোচনা দিয়ে তাকে দিয়ে কালোকে সাদা এবং সাদাকে কালো বানানোর সুযোগ নেই। কারণ সার্কেল মহোদয় একজন শতভাগ সৎ ও নীতি আদর্শবান পুলিশ কর্মকর্তা। শতভাগ সততার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন দীর্ঘ এক বছরের ও বেশী সময় ধরে। তাই তিনি যেখানে সকলের উপস্থিতিতে মনির ভাইর কর্মময় জীবন সুন্দরভাবে উপস্থাপন ও বিশ্লেষন করেছেন সকলেই শুনে মুগ্ধ। আমরাও চাইবো মনির ভাই যেখানেই থাকবেন কাঁচপুরে যেভাবে মানুষকে সেবা দিয়েছেন, বিরামহীন অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, সেভাবেই নতুন কর্মস্থলে গিয়ে সে এলাকার মানুষকে সেবা দিলে আমরা জানতে পারবো শুনতে পারবো মনির ভাই এখনো সেই আগের মতো আছে তখন আমাদের চেয়ে আর কেউ আর খুশি হবেনা, আমরা এখানে ও আপনাকে নিয়ে গর্ববোধ করছি যেখানেই থাকুন না কেন আপনি আমাদের হৃদয়ে চির অমলিন, স্মৃতির পাতায় চির অমলিন হয়ে থাকবেন। আপনার ও আপনার পরিবারের সকলের সুস্বাস্থ কামনা করছি, আপনার সার্বিক মঙ্গল কামনা করছি, যেখানে থাকবেন মহান রাব্বুল আলামিন যেন আপনাকে আরো ভাল রাখেন এই কামনা করি। যেতে দিতে নাহি মন চায় তবু যেতে দিতে হয় এটাই দুনিয়ার রীতি থেকে যাবে শুধু স্মৃতি।

ফেসবুক থেকে মন্তব্য করুন

এই বিভাগের আরও খবর


ফেসবুকে আমরা