সোমবার, ৮ই জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,
২রা মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি, সকাল ১১:১৪

মহাসড়কে ট্রাফিক থানা ও ফাঁড়ির পুলিশের যানবাহন আটক বাণিজ্য,দুর্নাম পড়ছে কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের

স্টাফ রিপোর্টারঃ
নারায়নগঞ্জ জেলা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশের পোষাক একই রকম দেখতে , শুধু মনোগ্রামটা একটু ভিন্ন। দূর থেকে মনোগ্রাম দেখা যায় না, তাছাড়া মনোগ্রাম কি তা সাধারন লোক বুঝেওনা। তারা একটা বিষয় ঠিকই বুঝে পুলিশ মহাসড়কে বিভিন্ন যানবাহন আটক করে কিছু যে একটা করছে এটা অতি সহজেই বুঝতে পারে। তাই নেতিবাচক মনোভাব নিয়ে উল্টোপাল্টা কথা বলেই থাকে হর হামেশা। তবে পুলিশ বিভিন্ন কারণে সড়ক মহাসড়কে দায়িত্ব পালন করে থাকেন বলে জানাগেছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে সচেতন মহল অভিযোগ করেন, নারায়নগঞ্জ জেলার গোলাকান্দাইল, ভুলতা গাউছিয়া, বিশ্বরোড, ৩০০ ফুট, বস্তাল, মদনপুর, কামতাল , মোগড়াপাড়া, তারাব বিশ্বরোড, বরাব, বরপা, এশিযান হাইওয়েও রুপসীসহ বিভিন্ন পয়েন্টে স্ব স্ব থানা এলাকার থানা পুলিশ, ফাঁড়ির পুলিশ এবং জেলা ট্রাফিক বিভাগের সদস্যরা ডিউটির নামে বিভিন্ন যানবাহন আটক করে বাণিজ্যে মেতে উঠছে দীর্ঘদিন ধরে। অথচ মহাসড়কের ৯০ কিলৈামিটার গাজীপুর রিজিয়ন পুলিশের কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের আওতাধীন এলাকা। থানা, ফাঁড়ি ও ট্রাফিক বিভাগ যানবাহন আটক বাণিজ্য করলেও সম্পূর্ণ দুর্নাম হচ্ছে কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের। কারণ সাধারন মানুষ মনে করেন যেহেতু মহাসড়ক এর ৯০ কিলোমিটারই কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের দায়িত্বে রয়েছে তাই ওই আটক বাণিজ্য তারাই করছে। সাধারন মানুষ আসল রহস্য কি তা বুঝেনা বুজতেও চায়না। মহাসড়কের উলে­খিত এলাকায় সমূহে থানা, ফাঁড়িও হাইওয়েসহ পুলিশের ১৬ টি পার্টি ডিউটি করে থাকে প্রতিনিয়ত। এরপর আছে নারায়ণগঞ্জ জেলা ট্রাফিক বিভাগের সদস্যরা। এরা সকাল থেকে রাত ৯টা ১০ টা পর্যন্ত মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে কাজ করে। ১৬ টি পার্টির মধ্যে কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের পার্টি রয়েছে মাত্র ২ টি। মহাসড়কে যে কোন দুর্ঘটনা ঘটলে তখন ওই যে ১৪ টি পার্টি রয়েছে তারা সাফ জানিয়ে দেয় এটা হাইওয়ে পুলিশ দেখবে। দুর্ঘটনায় হতাহত হলে যানবাহন দুমড়ে মুচরে গেলে হতাহতদের উদ্ধার,দুমড়ে যাওয়া গাড়ি উদ্ধার করে মহাসড়ক সচল করা, অজ্ঞাত লাশ হলেতো নিজ খরচে হাইওয়ে পুলিশকে দাফন পর্যন্ত করতে হচ্ছে। তখন থানা পুলিশ, ফাঁড়ির পুলিশ, সার্জেন্ট, টিআই, রেকারের এটিএসআই কেউ থাকেনা হাইওয়ে পুলিশের পাশে। মহাসড়কের তারাববিশ্বরোড, বরাব, বরপা, ভুলতা গাউছিয়া, গোলাকান্দাইল,৩শ, ফুট,বস্তাল ,এশিয়ান হাইওয়ে রোডে, মদনপুর, মোগড়াপাড়া, কামতাল মালিবাগসহ বিভিন্ন পয়েন্টে নারায়ণগঞ্জ জেলা ট্রাফিক বিভাগের টিআই, সার্জেন্ট, টিএসআই ও এটিএসআইরা ডিউটির নামে অহরহ বিভিন্ন যানবাহন আটক করে কাগজপত্র চেক করার নামে মামলার ভয় দেখিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে অর্থ। তাদের মতো থানা পুলিশ ও ফাঁড়ির পুলিশও থেমে নেই আটক বাণিজ্যে। তাদের সামনে দিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত থ্রী হুইলার যানবাহন এবং,ইজিবাইক, ভটভটি, ব্যাটারি চালিত রিকশা দেদারছে চলাচল করছে। ট্রাফিক বিভাগের সস্যদের এ সকল অবৈধ যানবাহন মাসোয়ারা দিয়ে চলাচল করছে বলে অভিযোগ রয়েছে স্থানীয়দের। এর পরে রয়েছে থানা পুলিশ ও ফাঁড়ির পুলিশ তারাও এ কাজ করছে। থানা , ফাঁড়ি ও ট্রাফিক বিভাগ যদি সক্রিয়ভাবে মহাসড়কে কাজ করতো তবে মহাসড়কে থ্রী হুইলার যানবাহন , ইজিবাইক, ব্যাটারি চালিত রিকশা ও ভটভটি চলাচল করতে পারতোনা বলে মনে করেন সচেতন মহল। এই অবৈধ যানবাহন মহাসড়কে উঠার কারণে হাইওয়ে পুলিশকে আরো কঠোর নজরদারিত্ব করতে হচ্ছে। হাইওয়ে পুলিশ এবং হাইওয়ে পুলিশের কমিউনিটি পুলিশও মহাসড়কে ডাকাতি ছিনতাইরোধে কঠোরভাবে কাজ করছে বলে জানান এলাকাবাসীরা। লোকবল ও যানবাহন সংকট থাকা সত্বেও কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মনিরুজ্জামান এর নেতৃত্বে এবং কঠোর মনিটরিং করার কারণে মহাসড়কের ৯০ কিলোমিটার পাড়ি দিতে পারছে মানুষ নির্বিঘেœ। অতীতে এই ব্যস্ততম মহাসড়কে কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ ছিল যানবাহন আটক বানিজ্য নিয়ে। মহাসড়কে বিভিন্ন যানবাহনে ও পন্যবাহী যানে ডাকাতি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধমূলক ঘটনা ঘটতো বলে বিভিন্ন পেশার লোকজন জানিয়েছেন। তারা আরও জানান, কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ওসি মোঃ মনিরুজ্জামান গত প্রায় ৬ মাসে মহাসড়ক থেকে বেশ কয়েকজন ডাকাত, ছিনতাইকারী, মাদক চোরাকারবারীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হওয়ায় মহাসড়ক অনেকটাই নিরাপদ বলে মনে করেন মহাসড়কের পাশের বাসিন্দারা এবং মহাসড়কে চলাচলরত পন্যবাহী গাড়ির চালকরা। এলাকাবাসীরা তাদের নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মহাসড়কে নিষিদ্ধ ঘোষিত থ্রী হুইলার ও অবৈধ যানবাহন, ইজিবাইক, ব্যাটারি চালিত রিকশা, ভটভটি, ডেটফেল বাস মিনিবাস, ট্রাক, কাভার্ডভ্যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ করলে সড়ক দুর্ঘটনা কমবে । পাশাপাশি ট্রাফিক পুলিশ , থানা পুলিশ, ফাঁড়ির পুলিশের আটক বানিজ্য বন্ধ করলে মহাসড়কে সর্বসাধারণের জন্য হবে গতিময়ও সুদৃঢ়। এতে করে কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের শত ভাগ সেবাসর্বসাধারন ভোগ করতে পরবে। ট্রাফিক বিভাগ, থানা ও ফাঁড়ির পুলিশ নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য দায় এড়িয়ে কাঁচপুর হাইওয়ে পুেিশর সাথে কোনভাবেই সমন্বয় করে কাজ না করার কারণে সমস্যা প্রকট হচ্ছে বলে জানাগেছে। হাইওয়ে পুলিশ তাদের সাথে সম্বনয় করে কাজ করতে চাইলেও তারা তাদের কথায় কর্ণপাত করছেনা বলে অভিযোগ রয়েছে। মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে যানবাহন আটক করে বাণিজ্য করার বিষয়ে কাঁচপুর হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মনিরুজ্জামান এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার হাইওয়ের কোন পুলিশ সদস্য মহাসড়কে যানবাহন আটক বাণিজ্যের সাথে জড়িত নয়। তবে কারা এসব করছে এর প্রতিউত্তরে তিনি বলেন,ভাল করে খোঁজ নিয়ে দেখেন আমার হাইওয়ের কোন পুলিশ সদস্য ওই ধরনের কাজের সাথে জড়িত নেই। ওসি মনিরুজ্জামান আরও বলেন , আমি পুলিশ হয়ে আরেক পুলিশের বদনাম কোনভাবেই করতে পারিনা,তবে ওইসবের সাথে কারা জড়িত কেন জড়িত এবং কে কি করছে তা জানিনা,তিনি আরও বলেন মাসুষকে সেবা দিতে এসেছি, মানবিক পুলিশ হিসেবে কাজ করে মানুষের মনে ঠাঁই করে নিতে চাই। ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, মহাসড়কে থ্রী হুইলার যানবাহন, ইজিবাইক, লেগুনাসহ নিষিদ্ধ ঘোষিত যানবাহন পেলে আমরা ডাম্পিং করছি এবং মামলা দিচ্ছে কাউকে ছাড় দিচ্ছিনা। মহাসড়কের পাশে অবৈধ দোকানপাট ইতিপর্বৈ অনেকবার উচ্ছেদ করেছি এবং তা অব্যাহত রয়েছে উচ্ছেদ কার্যক্রম। তিনি আরও বলেন,কাঁচপুর হাইওয়ে থানার সকল পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের আমি ওসি হিসেবে যোগদান করার পর থেকেই সাফ জানিয়ে দিয়েছি মানুষকে হয়রানি করা যাবেনা, সাধ্যমত সেবা দিতে হবে, কোন পুলিশ সদেস্যর বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে এবং সে তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হলে তাকে কোন ভাবেই ছাড় দেওয়া হবেনা সংকেত দেওয়া আছে বলে ওসি জানান। তাই কাঁচপুর হাইওয়ের ওসি মোঃ মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে মানবিক পুলিশ হিসেবে কাজ করে যথেষ্ট সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে বলে কাঁচপুরবাসী মনে করেন।

ফেসবুক থেকে মন্তব্য করুন

এই বিভাগের আরও খবর


ফেসবুকে আমরা